সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ২০ লাখ ইউক্রেনীয়। সর্বাত্মক হামলার মুখে প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থী হওয়া এসব মানুষের মধ্যে প্রায় ৮ লাখই শিশু বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। খবর বিবিসির।
সংস্থাটি বলছে, দেশ ছেড়ে শরণার্থী হওয়া বিপুল সংখ্যক এই শিশুদের অনেকেই কোনো সঙ্গী ছাড়াই একা ভ্রমণ করছেন এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে পৌঁছেছেন। আন্তর্জাতিক বেসরকারি এই সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী শিশুদের কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করে থাকে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের ইরিনা সাগোইয়ান বলছেন, ‘(রুশ হামলার মুখে) পিতা-মাতারা তাদের সন্তানদের জীবন বাঁচাতে সবচেয়ে মরিয়া। এমনকি সন্তানদের রক্ষা করতে তাদের অনেকে হৃদয়বিদারক নানা পন্থা অবলম্বন করছেন। এর মধ্যে নিরাপত্তা ও নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সঙ্গে সন্তানদেরকে ইউক্রেনের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও রয়েছে এবং নিজের বাড়ি রক্ষার জন্য তারা সেখানেই অবস্থান করছেন।’
তিনি বলেন, গতকালই এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে হাসান নামে ১১ বছর বয়সী এক ছেলে শিশু একাই জাপোরিঝিয়া শহরের বাড়ি ছাড়ে। কারণ তার মা তার দাদীকে বাড়িতে একা ছেড়ে যেতে চাননি।
অবশ্য ১১ বছর বয়সী ওই শিশু ১২০০ কিলোমিটার ট্রেন ভ্রমণ করে নিরাপদে স্লোভাকিয়ায় পৌঁছেছে। দীর্ঘ এই ভ্রমণে ছোট ওই শিশুর কাছে মাত্র দুটি ছোট ব্যাগ, তার পাসপোর্ট এবং হাতে তার আত্মীয়দের ফোন নাম্বার লেখা ছিল।
বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেন ছেড়ে পোল্যান্ডে যাওয়া অর্ধেকেরও বেশি শরণার্থী দেশটি থেকে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ায় যাচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি মঙ্গলবার এক টুইট বার্তায় বলেছেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারির পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ২০ লাখ ১১ হাজার ৩১২ জন মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়েছেন। ইউক্রেনের শরণার্থীদের গ্রহণে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে পোল্যান্ড। দেশটিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত গত ১৩ দিনে ১২ লাখের বেশি মানুষ পাড়ি জমিয়েছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক এই সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে হাঙ্গেরিতে প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার ৩৫০ জন, স্লোভাকিয়ায় ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৫ জন এবং রাশিয়ায় ৯৯ হাজার ৩০০ জন ইউক্রেনীয় ঢুকে পড়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, রবিবার পর্যন্ত মলদোভা ও রোমানিয়া ৮২ হাজারের বেশি করে শরণার্থী গ্রহণ করেছে। এর পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে আসা ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে ইউরোপের অন্যান্য দেশে চলে গেছেন।